ওবিসি সার্টিফিকেট পেতে চাষি কৈবর্ত (মাহিষ্য) সমাজের মানুষের করনীয় কি?
১) প্রচুর সংখ্যক অন লাইন আবেদন করে BDO অফিসে জমা দিতে হবে। জমা নেওয়া বাধ্যতামূলক নির্দেশ নামা 1464 ধারা 9.
২) যারা ভাবছেন প্রধান জাতি সার্টিফিকেট দেবেনা? বংশ তালিকা দেবে না? দরকার নেই। তার জন্য ৩০০৫ অর্ডারে ডাইরেকশন আছে। BDO, SDO রা কার্যকর করেনা।
৩) জোট বাঁধুন, প্রতিটি বুথ থেকে ৫০-১০০ আবেদন পত্র জমা করুন। রাজনৈতিক নেতাদের অ্যাভয়েট করুন। চাপ পড়লে ওরাই আপনাদের পায়ে পড়বে।
৪) মনে রাখতে হবে একটা আবেদন পত্র বাতিল করলে DM,SDO, BDO সকলকেই কৈফিয়ৎ দিতে হয়। এই জন্য ওরা আবেদন পত্র গুলো অফিসিয়ালি এন্ট্রি করেনা। এইটা আমাদের চাপ তৈরী করতে RTI করতে হবে এবং আধিকারিক প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাংগঠনিক কথপোকথন চলবে। অনলাইন রিজেক্ট চাই, তার কপি চাই।
৫) মনে রাখতে হবে হাজার হাজার একটাই জনগোষ্ঠীর আবেদন জমা পড়লে এবং রিজেক্ট করলে বিষয়টি বিধান সভার স্ট্যান্ডিং কমিটিতে আলোচনা হতে বাধ্য এবং সেই মত বিধান সভায় আইন সংশোধন হতে বাধ্য।
৬) বর্তমানে রাজনৈতিক কারণে এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের আইন বা জিও কার্যকর না করার কারণে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের চাষি কৈবর্ত (মাহিষ্য) আবেদন পত্র গ্রহণ না করা, ইচ্ছা করে ফেলে রাখা এবং বিভিন্ন ধরনের ভয়দেখিয়ে ধারাবাহিক হয়রানি চলছে। এর প্রতিকার করতে হলে হাজার হাজার আবেদন পত্র জমা করুন এবং চোখে চোখ রেখে আধিকারিকদের বলুন সার্টিফিকেট নয়, আইন মেনে রিজেক্ট করুন। আমি রিজেক্ট সার্টিফিকেট পেতে আবেদন পত্র জমা করেছি।
৭) একজন মানুষের জাতি সার্টিফিকেট পাওয়ার অধিকার সাংবিধানিক। সরকারি নিয়ম মেনে তা দেওয়ার আইন আছে কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে অধিকাংশ আধিকারিক তা কার্যকর করে না। আর রাজনৈতিক দল নিজেদের লোক ছাড়া বিরোধী দলের কাউকে সহযোগিতা করেনা। অথচ আমরা সকলেই এক আইনের অন্তর্ভুক্ত এক দেশের বাসিন্দা। সুতরাং আমরা আইন মেনে আইনগত ভাবেই অধিকার আদায় করব।
৮) আবেদন পত্রের সঙ্গে কি কি দেবেন?
ক) অন লাইন ফর্ম ফিলাপ করা কপি।
খ) দুটো পাশর্পোট ছবি।
গ) নিজের ও পিতার ভোটার ও রেশন কার্ডের জেরক্স।
ঘ) বাড়ীর পঞ্চায়েত / মিউনিসিপ্যালিটির ট্যাক্সের রশিদ জেরক্স।
ঙ) পারিবারিক ( পিতা, মাতার) আয় সার্টিফিকেট।
চ) ১০ জন প্রতিবেশীদের স্বাক্ষী হিসাবে জাতি চাষি কৈবর্ত উল্লেখিত ঘোষণা পত্র ও স্বাক্ষরিত ভোটার কার্ডের জেরক্স।
মনে রাখতে হবে অশুভ শক্তির সঙ্গে লড়াই করতে গেলে একটু মানসিক দৃঢ়তা লাগে। তাই এলাকায় সংগঠিত হোন। শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতী, ছাত্র ছাত্রীদের এই কাজে এগিয়ে আসতে হবে। কারো কাছে মাথা নত নয়, মাথা উঁচু করে নিজের সাংবিধানিক অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করতে এগিয়ে আসুন। মনে রাখতে হবে পঞ্চম শ্রেণী থেকে সকলের স্টাইপেন্ড থাকার সত্ত্বেও আপনি আপনার ভাইবোন বঞ্চিত। ২৭% কেন্দ্রীয় সরকারের সংরক্ষণ থেকে ও রাজ্য সরকারের ৭% সংরক্ষণ থেকে বঞ্চিত। সরকারি চাকরিতে বয়সসীমার পরেও ৩ বছরের বাড়তি ছাড় থেকে বঞ্চিত। উচ্চ শিক্ষার লোন থেকে বঞ্চিত। বেকারদের কর্মসংস্থান সংক্রান্ত নানা ধরনের প্রকল্প থেকে বঞ্চিত।
যারা বলছে সংরক্ষণ তুলে দেওয়া হোক। জাতপাত সংরক্ষণ মানিনা। তাদের বলুন ভাই আইন সভায় গিয়ে সংবিধান পরিবর্তন করে তারপর বল, আমিও সমর্থন করব কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত না তা হচ্ছে সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে আমাদের তা গ্রহণ করতে হবে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর ধরে সংরক্ষণের সুযোগ থেকেও না নিয়ে আমরাই কেবল বঞ্চিত থেকে গেছি। সুতরাং আর ভুল নয়, চলো সবাই ওবিসি সার্টিফিকেট নিতে আবেদন পত্র জমা করি। রাজনীতি নয় জাতি সংগঠনের মাধ্যমে নিজের সাংবিধানিক অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করি। জয় ওবিসি।
সিদ্ধানন্দ পুরকাইত
সম্পাদক
চাষি কৈবর্ত (মাহিষ্য) সমাজ